সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জে ৪০ বছর ভিক্ষা করে জমানো একটি টাকাও খরচ করেননি এক নারী। যেখানে যা পেয়েছেন সব জমা করেছেন আর খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। ভিক্ষা করে জমিয়েছিলেন তিন বস্তা টাকা। সেই টাকা রেখেই মারা গেলেন ‘ভিক্ষুক’ সালেহা বেগম নামের ওই নারী। গত শুক্রবার রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহরিয়ার শিপু এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সালেহা পাগলী ভিক্ষা করতেন। দুই দিনে তার কাছ থেকে তিন বস্তা টাকা পেয়েছি। অর্ধেক টাকাই পচে গেছে, ১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা ভালো পাওয়া গেছে। টাকাগুলো আমার কাছে জমা রয়েছে। আমরা তার চিকিৎসা নিয়ে কাজ শুরু করি। সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল, নর্থবেঙ্গল হাসপাতাল সর্বশেষ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। সেখানে তার লিভার ক্যানসার ধরা পরে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। তার লাশ নিয়ে এসে গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় জানাজা শেষে কান্দাপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। জানা যায়, মাছুমপুর মহল্লার মৃত আব্দুস ছালামের স্ত্রী সালেহা বেগম। ছালে পাগলি’ নামেই এলাকায় পরিচিত। তিনি রায়পুর ১ নম্বর মিলগেটে শ্রমিকদের পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের বারান্দায় একাই থাকতেন। সম্প্রতি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে মাছুমপুর মহল্লার একটি বাড়িতে অবস্থান করেন। গত ৯ অক্টোবর পরিত্যক্ত কোয়ার্টার থেকে ২ বস্তা টাকা উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সাতজন লোক প্রায় ৫ ঘণ্টা গণনা করে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ টাকা পায়। দুদিন পর ১১ অক্টোবর একই স্থান থেকে আরও ১ বস্তা টাকা উদ্ধার হয়। গণনা করে সব মিলিয়ে প্রায় এক লাখ ৭৪ হাজার পাওয়া যায়। সালেহা বেগমের মেয়ে স্বপ্না খাতুন বলেন, আমার মা পাগলা টাইপের। জায়গায় জায়গায় ঘুরে টাকা-পয়সা যা পাইছে পোটলা করে রেখেছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata